আলোকের প্রতিসরণ (Refraction of Light)

👉 প্রতিসরণ : স্বচ্ছ এবং সমসত্ত্ব আলোকীয় মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলোক-রশ্মি সরলরেখায় চলে। আলোক-রশ্মি যখন এক সমসত্ত্ব ও স্বচ্ছ যে মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে আলোক চলাচল করতে পারে থেকে ভিন্ন ঘনত্বের অন্য আর একটি সমসত্ত্ব ও স্বচ্ছ আলোকীয় মাধ্যমের উপর তির্যকভাবে আপতিত হয়ে ঐ দ্বিতীয় মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ-তল থেকে ঐ রশ্মির গতির অভিমুখের পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় মাধ্যমে আলোক-রশ্মির গতিপথের এই রকম দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোকের প্রতিসরণ বলে।

আলোকীয় মাধ্যমের পরিবর্তনে ফলে আলোকরশ্মির বেগ, তীব্রতা ও তরঙ্গদৈর্থ্যের পরিবর্তন ঘটে, আলোকের প্রতিসরণ হয়।

👉 প্রতিসরণের নিয়ম :

আলোক-রশ্মি লঘু থেকে ঘন মাধ্যমে প্রবেশ করলে

আলোক-রশ্মি লঘু থেকে ঘন মাধ্যমে প্রবেশ করলে

প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্বের দিকে সরে আসে। তাই এক্ষেত্রে আপতন কোণ (i), প্রতিসরণ কোণের (r) চেয়ে বড় হয়, অর্থাৎ i > r হবে।

🔹 চ্যুতি কোণ (δ) = আপতন কোণ (i) - প্রতিসরণ কোণের (r)

আলোক-রশ্মি ঘন থেকে লঘু মাধ্যমে প্রবেশ করলে

আলোক-রশ্মি ঘন থেকে লঘু মাধ্যমে প্রবেশ করলে

প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। তাই এক্ষেত্রে প্রতিসরণ কোণ (r), আপতন কোণের (i) চেয়ে বড় হয়, অর্থাৎ r>i হবে।

🔹 চ্যুতি কোণ (δ) = প্রতিসরণ কোণের (r) - আপতন কোণ (i)

প্রতিসরণ তথা প্রতিসরাঙ্ক নির্ভর করে

🔹 আপতিত আলোক-রশ্মির বর্ণ।

🔹 দুই মাধ্যমের প্রকৃতি।

🔹 দুই মাধ্যমের উষ্ণতার উপর।

মাধ্যম পরিবর্তন হলেও প্রতিসরণ হবে না যদি

🔹 আলো লম্বভাবে আপতিত হয়।

🔹 মাধ্যম দুটির প্রতিসরাঙ্ক সমান হয়।

👉 প্রতিসরণের সূত্র : আলো দুটি সূত্র অনুযায়ী প্রতিসরণ হয়

প্রতিসরণের সূত্র

প্রতিসরণের সূত্র

🔹 আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদ তলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।

🔹 দুটি নির্দিষ্ট মাধ্যমে নির্দিষ্ট বর্ণের আলোক-রশ্মির প্রতিসরণে, আপতন কোণের sine এবং প্রতিসরণ কোণের sine-এর অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক হয়ে।

(ধ্রুবক)

প্রতিসরণের এই সূত্রটিকে স্নেলের সূত্র বলে

এই সূত্র থেকে প্রতিসরাঙ্ক ধ্রুবকের ধারণা পাওয়া যায়, যা মিউ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। ধ্রুবক -কে a মাধ্যমের সাপেক্ষে b মাধামের প্রতিসরাঙ্ক বলে

একটি এককবিহীন এবং মাত্রাবিহীন ধ্রুবক

⭐ শূন্য মাধ্যমের সাপেক্ষে কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ককে পরম প্রতিসরাঙ্ক বলে।

⭐ এক মাধ্যমের সাপেক্ষে অপর মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ককে আপেক্ষিক প্রতিসরাঙ্ক বলে।

ধরি, a মাধ্যমে আলোর বেগ , আর পরম প্রতিসরাঙ্ক --- (i)

এবং, b মাধ্যমে আলোর বেগ , আর পরম প্রতিসরাঙ্ক --- (ii)

( ∵ - শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ)

( ∵ (i) ও (ii) নং সমীকরণ অনুযায়ী)

( ∵ )

এটি হল স্নেলের সূত্রের সাধারণ রূপ

মাধ্যমের আপেক্ষিক প্রতিসরাঙ্ক 1-এর সমান, 1-এর থেকে কম বা বেশি হতে পারে। কিন্তু পরম প্রতিসরাঙ্ক সর্বদাই 1-এর থেকে বেশি হবে।

( μ → প্রতিসরাঙ্ক, λ → তরঙ্গদৈর্ঘ্য, A এবং B → ধুবক) বিজ্ঞানী ‘কশি’-র সূত্র যা আলোর এবং মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে।