গোলীয় দর্পণ (Curved Mirror)

কোনো প্রতিফলক তল যদি কোনো গোলকের পৃষ্ঠের অংশবিশেষ হয়, এবং এই পৃষ্ঠের মাধ্যমে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তবে তাকে গোলীয় দর্পণ বলে।

গোলীয় দর্পণ দুই প্রকার

tree

উত্তল দর্পণ

অবতল দর্পণ

উত্তল দর্পণ (Convex Mirror)

উত্তল দর্পণ (Convex Mirror)

নীল বৃত্ত-অংশ প্রতিফলক তলকে নির্দেশ করছে।

মেরু বা মধ্যবিন্দু - O, বক্রতা কেন্দ্র - C, বক্রতা ব্যাসার্ধ - OC, প্রধান অক্ষ - XX´, প্রধান ছেদ - E, উন্মেষ - MM´, কৌণিক উন্মেষ - MOM´

অবতল দর্পণ (Concave Mirror)

অবতল দর্পণ (Concave Mirror)

নীল বৃত্ত-অংশ প্রতিফলক তলকে নির্দেশ করছে।

মেরু বা মধ্যবিন্দু - O, বক্রতা কেন্দ্র - C, বক্রতা ব্যাসার্ধ - OC, প্রধান অক্ষ - XX´, প্রধান ছেদ - E, উন্মেষ - MM´, কৌণিক উন্মেষ - MOM´

👉 গোলীয় দর্পণ সংক্রান্ত বিভিন্ন রাশিগুলি হল।

🔹 মেরু (Pole) : গোলীয় দর্পণের প্রতিফলক তলের মধ্যবিন্দুকে ওই দর্পণের মেরু বলে।

🔹 বক্রতা কেন্দ্র (Centre of Curvature) : গোলীয় দর্পণটি যে গোলকের অংশ সেই সেই গোলকের কেন্দ্রকে দর্পণটির বক্রতা কেন্দ্র বলে

🔹 বক্রতা ব্যাসার্ধ (Redius of Curvature) : গোলীয় দর্পণটি যে গোলকের অংশ সেই সেই গোলকের ব্যাসার্ধকে দর্পণটির বক্রতা ব্যাসার্ধ বলে।

🔹 প্রধান অক্ষ (Principal Axis) : গোলীয় দর্পণের মধ্যবিন্দু ও বক্রতা কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে অঙ্কিত সরলরেখাটিকে দর্পনের প্রধান অক্ষ বলা হয়।

🔹 উন্মেষ (Aperture) : গোলীয় দর্পণের প্রধান ছেদের দুই প্রান্তবিন্দু যোগ করে যে সরলরেখা পাওয়া যায় তাকে ওই দর্পনের উন্মেষ বলে।

🔹 কৌণিক উন্মেষ (Angular Aperture) : উন্মেষের প্রান্তবিন্দু দ্বয় বক্রতা কেন্দ্রে যে কোন উৎপন্ন করে তাকে ওই দর্পনের কৌণিক উন্মেষ বলে।

গোলীয় দর্পণের একটি মাত্র বক্রতা কেন্দ্র থাকে। সমতল দর্পণের বক্রতা কেন্দ্র অসীমে অবস্থিত হয়।

গোলীয় দর্পণের কৌণিক উন্মেষ 10° -এর কম হলে, তাকে ক্ষুদ্র উন্মেষ যুক্ত দর্পণ বলে।

🔹 মুখ্য ফোকাস (Principal Focus): গোলীয় দর্পণের প্রধান অক্ষের সাথে সমান্তরালভাবে আগত রশ্মিগুচ্ছ দর্পণ কর্তৃক প্রতিফলিত হয়ে প্রধান অক্ষের উপর একটি বিন্দুতে মিলিত হয় ওই বিন্দুটিকেই মুখ্য ফোকাস বলে।

উত্তল দর্পণের মুখ্য ফোকাস

উত্তল দর্পণের মুখ্য ফোকাস

Principal Focus of Convex Mirror

উত্তাল দর্পণের ক্ষেত্রে প্রধান অক্ষের সাথে সমান্তরালভাবে আগত রশ্মিগুচ্ছ দর্পণ কর্তৃক প্রতিফলিত হয়ে অপসারী রশ্মিতে পরিণত হয় এবং প্রধান অক্ষের একটি বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়। ওই বিন্দুটিকেই উত্তল দর্পণের মুখ্য ফোকাস বলে।

🔹 এই কারণে দর্পণকে অপসারী দর্পণ বলে।

অবতল দর্পণের মুখ্য ফোকাস

অবতল দর্পণের মুখ্য ফোকাস

Principal Focus of Concave Mirror

অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে প্রধান অক্ষের সাথে সমান্তরালভাবে আগত রশ্মিগুচ্ছ দর্পণ কর্তৃক প্রতিফলিত হয়ে অভিসারী রশ্মিতে পরিণত হয় এবং প্রধান অক্ষের উপর একটি বিন্দুতে মিলিত হয়। ওই বিন্দুটিকেই অবতল দর্পণের মুখ্য ফোকাস বলে।

🔹 এই কারণে অবতল দর্পণকে অভিসারী দর্পণ বলে।

🔹 ফোকাস দূরত্ব (f): গোলীয় দর্পণের মেরু বিন্দু থেকে মুখ্য ফোকাসের দূরত্বই হল ফোকাস দূরত্ব।

গোলীয় দর্পনে প্রতিবিম্ব গঠনের নিয়ম (Laws of reflection formation in spherical mirrors)

বক্রতা কেন্দ্রগামী রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

বক্রতা কেন্দ্রগামী রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

🔹 অবতল বা উত্তল দর্পণে বক্রতা কেন্দ্রগামী আপতিত রশ্মি প্রতিফলনের পর একই পথ ধরে ফিরে আসে।

প্রধান অক্ষের সমান্তরাল রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

প্রধান অক্ষের সমান্তরাল রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

🔹 অবতল বা উত্তল দর্পণে প্রধান অক্ষের সমান্তরাল রশ্মি প্রতিফলনের পর প্রধান ফোকাস দিয়ে যায় বা অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়।

প্রধান ফোকাস থেকে আপতিত রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

প্রধান ফোকাস থেকে আপতিত রশ্মির প্রতিবিম্ব গঠন

🔹 অবতল বা উত্তল দর্পণে প্রধান ফোকাস দিয়ে আপতিত বা প্রধান ফোকাসগামী রশ্মি প্রতিফলনের পর প্রধান অক্ষের সমান্তরাল হয়ে যায়।

মেরু তে আপতিত রশ্মি

মেরু তে আপতিত রশ্মি

🔹 অবতল বা উত্তল দর্পণে মেরু তে আপতিত রশ্মিটি আপতন কোণ এবং প্রতিফলন কোণ সমান রেখে প্রতিফলিত হয়।

⭐ অবতল দর্পণ বস্তুর দূরত্বের উপর নির্ভর করে বাস্তব ও অসদ উভয় ধরনের প্রতিবিম্ব গঠন করতে পারে।
⭐ উত্তল দর্পণ এই দর্পণ সর্বদা অসদ, সোজা এবং সামশীর্ষ প্রতিবিম্ব তৈরি করে।